Forum
24
bd

















1. First of all registration here 2. Then Click on Be a trainer or writer button 3. Collect your trainer or writer id card from trainer master 4. And create post here for earn money! 5. For trainer 100 tk minimum withdraw 6. For writer 500 tk minimum withdraw 7. Payment method Bkash Only
obaydulbc obaydulbc
Trainer

2 years ago
obaydulbc

লাল-চুলো সংঘ পর্ব (২)



হোমস কিন্তু বাজনার আসরে আগে গেল না— গেল স্যাক্স কোবাগ স্কোয়ারে'। ভারি অপরিচ্ছন্ন অঞ্চল। কোণের বাড়িটায় বোর্ডে লেখা জাবেজ উইলসনের নাম। লাল-চুলো মক্কেলের বন্ধকি দোকান নিশ্চয়। চোখ কুঁচকে চেয়ে রইল হোমস সেইদিকে। তারপর দু-পাশের ইটের বাড়িগুলো দেখতে

দেখতে এল মোড় পর্যন্ত। ফের ফিরে এল দোকানের সামনে। জোরে জোরে দু-তিনবার লাঠি ঠুকল দরজার কাছে। অমনি খুলে গেল দরজা। চৌকাঠে দাঁড়িয়ে বুদ্ধিদীপ্ত এক পুরুষ, দাড়ি-গোঁফ নিখুঁতভাবে কামানো।' বললে, "আসুন।

“ধন্যবাদ। স্ট্র্যান্ডে যাওয়ার রাস্তাটা বলতে পারেন? শুধোয় হোমস। পথের হদিশ বলে দিয়ে দুম করে দরজা বন্ধ করে দিলে লোকটা। হোমস বললে, “দেখলে তো কীরকম চটপটে? এ রকম স্মার্ট লোক

লন্ডনে আছে আর তিনজন। বুকের পাটার দিক দিয়ে এ কিন্তু তিন নম্বর। 'রাস্তা জানতে চাইলে কেন ? চেহারাটা দেখবার জন্যে তো?”-

'না, না।'

"তবে ?"

ট্রাউজার্সের হাঁটুটা দেখলাম।

“তাই নাকি! কী দেখলে হাঁটুতে?

“যা দেখব বলে এসেছিলাম।” “মেঝেতে লাঠি ঠুকলে কেন?

'এখন দেখবার সময় ওয়াটসন, কথা বলার সময় নয়। এদিকের রাস্তা দেখা হয়েছে, চলো এবার পেছনে যাই।'

পেছনের রাস্তা কিন্তু জমজমাট পথচারী আর যানবাহনের ভিড়ে। স্যাক্স কোবাগ স্কোয়ারের নির্জনতার ঠিক বিপরীত। দু-পাশে সারি সারি ঝলমলে দোকান।

তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে রইল হোমস। যেন আপন মনেই বললে, "তামাকের দোকানের পরেই খবরের কাগজের দোকান; ব্যাঙ্কের পরেই রেস্তোরাঁ; তারপর বাড়ির কারখানা। চলো ওয়াটসন। এখানকার কাজ শেষ। এবার একটু চোখ বুজে তন্ময় হয়ে বাজনা শোনা যাবে।

হোমস ভালো বেহালা বাজাতে পারে, ভালো বাজনা শুনতেও ভালোবাসে। নতুন নতুন সুর তুলতে তার উৎসাহের অন্ত নেই। বাজনার আসরে বসে সে যেন অন্য মানুষ হয়ে গেল। সত্যিই নিজেকে হারিয়ে ফেলল গানের জগতে। তীক্ষ্ণবুদ্ধি রহস্যসন্ধানী বলে তখন তাকে আর মনেই হল না। এই সময়টাই কিন্তু শত্রুশিকারের পক্ষে মাহেন্দ্রক্ষণ। অসাধারণ বিশ্লেষণী শক্তি খাপখোলা বাঁকা তরবারির মতোই রহস্যকে কচুকাটা করে লক্ষ্যবস্তুর দিকে এগিয়ে যায় এহেন অলস মুহুর্তে ওর চরিত্রের এই দ্বৈত রূপ আমি দেখেছি বলেই বুঝলাম শত্রুপক্ষের কপাল পুড়তে আর দেরি নেই ।

বাজনা শেষ হল। রাস্তায় বেরিয়ে হোমস বললে, 'ডাক্তার, কেসটা

খুব গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বটা বেড়েছে আজকে শনিবার হওয়ায় সাংঘাতিক চক্রান্ত চলেছে এই কোবাগ স্কোয়ারে। আমাকে একটু অন্য জায়গায় যেতে হবে- কিন্তু আজ রাত্রে তোমার সাহায্যও দরকার। আসবে? "ক-টায় ?”

41/292

*এই ধর দশটায় ?”

*আসব বেকার স্ট্রিটে দেখা হবে।' -

‘সঙ্গে মিলিটারি রিভলভারটা এনো— দরকার হতে পারে।' বলেই সাৎ করে মিলিয়ে গেল ভিড়ের মধ্যে।

শার্লক হোমসের তুলনায় আমি যে কত নির্বোধ, সে প্রমাণ বারে বারে পেয়েছি। লাল-চুলো সংঘের বিচিত্র কাণ্ডকারখানার আমি যা জানি, সে-ও তা জানে; আমি যা দেখেছি, সে-ও তা দেখেছে। তা সত্ত্বেও হোমস জেনে ফেলেছে একটা ঘোর ষড়যন্ত্র চলছে এখানে এবং এমনই বিপদের সম্ভাবনা আছে যে পিস্তল পর্যন্ত সঙ্গে রাখতে হচ্ছে। অনেক ভেবেও কুলকিনারা করতে পারলাম না হেঁয়ালির— হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দিলাম।

যথাসময়ে গেলাম বেকার স্ট্রিটের বাড়িতে। দেখি ঘরে হাজির হয়েছেন একজন পুলিশ ইনস্পেকটর আর একজন দামি পোশাক পরা বিষণ্ণ ভদ্রলোক। প্রথম জনকে আমি চিনি— স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের গোয়েন্দা। নাম, পিটার জোন্স। দ্বিতীয়জন অপরিচিত।

পরিচয় করিয়ে দিল হোমস। ভদ্রলোকের নাম মি. মেরিওয়েদার।

নৈশ অভিযানে আমাদের সঙ্গে যাচ্ছেন। ব্যাজার মুখে মি. মেরিওয়েদার কিন্তু গজগজ করতে লাগলেন, 'নিয়ে

যাচ্ছেন বটে, কিন্তু পণ্ডশ্রম হবে। সাতাশ বছরে এই প্রথম শনিবারের তাস খেলাটা হল না আমার।'
হোমস বললে, 'তাসের চাইতেও বেশি বাজি জিতবেন আজ রাতে - তিরিশ হাজার পাউন্ড কি কম হল? আর মি. জোন্স পাবেন একজনকে যাকে হন্যে হয়ে খুঁজছেন দীর্ঘদিন।

"সে আবার কে ?

"তার নাম ক্লে। মানুষ খুন বলুন, কি চুরিচামারি বলুন, ডাকাতিই

হোক কি জালিয়াতি হোক— সব বিদ্যেতেই সে তুখোড়। বয়স কম, রাজবংশের ছেলে। উচ্চশিক্ষা পেয়েছে, কিন্তু নীচ পেশায় রপ্ত হয়েছে। আজ রাতেই তার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেব আপনার। চলুন এবার বেরোনো যাক। বলে শিকারের চাবুক নিয়ে পা বাড়াল সিঁড়ির দিকে। পথে নেমে দুটো গাড়িতে উঠলাম চারজনে। আমি আর হোমস

রইলাম পেছনের গাড়িতে। বেশ কিছুক্ষণ মনের আনন্দে নানারকম সুর

ভেজে চলল গোয়েন্দা বন্ধু ।

তারপর বললে, 'এসে গেছি। শোনো ওয়াটসন, এই মেরিওয়েদার লোকটা একটা ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর। আজকের অভিযানে ওঁর থাকা দরকার ওঁর নিজের স্বার্থে। জোন্সকে সঙ্গে নিলাম ওর বুলডগের মতো জেদ আর সাহসের জন্যে।'

দিনের আলোয় ঝলমলে যে দোকান পসারির সামনে দিয়ে গিয়েছিলাম, সেই রাস্তায় নামলাম গাড়ি থেকে। মি. মেরিওয়েদার আমাদের একটা সরু গলির মধ্যে দিয়ে নিয়ে গিয়ে ছোট্ট দরজা খুলে ভেতরে ঢোকালেন। সেখান থেকে করিডর পেরিয়ে লোহার ফটক খুলে ঘোরানো

পাথরের সিঁড়ি বেয়ে মাটির তলায় নামলেন। লোহার দরজা পেরিয়ে কিছুদূর গিয়ে ঢুকলেন একটা পাতাল ঘরে— ঘরভর্তি কেবল বড়ো বড়ো কাঠের বাক্স।

আসবার পথে একটা লণ্ঠন জ্বেলে এনেছিলেন মেরিওয়েদার। সেইটা মাথার ওপর তুলে হোমস বললে, 'বিপদটা ওপর থেকে আসছে না।'

নীচ থেকেও আসবে না, বলে ঠক ঠক করে মেঝেতে লাঠি ঠুকলেন মি. মেরিওয়েদার। চমকে উঠলাম সঙ্গেসঙ্গে, আরে সর্বনাশ! মেঝেটা ফাঁপা মনে হচ্ছে না?'

রেগে গেল হোমস। বললে, 'ঘাটে এসে তরী ডুববে দেখছি আপনার

জন্যে। দয়া করে বাগড়া না-দিয়ে বাক্সের ওপর উঠে বসবেন? মি. মেরিওয়েদারের মুখ লাল হয়ে গেল। গম্ভীর মুখে একটা কাঠের বাক্সে উঠে বসে রইলেন।

হোমস তখন লণ্ঠন আর আতশ কাঁচ নিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ল মেঝের ওপর। অনেকক্ষণ ধরে পাথরের জোড় পরীক্ষা করে উঠে দাঁড়াল হৃষ্টচিত্তে। বললে, “হাতে এখনও ঘণ্টাখানেক সময় আছে। জাবেজ উইলসন ঘুমিয়ে কাদা না-হওয়া পর্যন্ত ওরা কাজে নামবে না। ওয়াটসন, কোথায় দাঁড়িয়ে আছ বুঝেছ তো? ব্যাঙ্কের ভল্ট এটা মি. মেরিওয়েদার এই ব্যাঙ্কের সর্বময় - কর্তা। লন্ডনের ডাকসাইটে ক্রিমিনালরা হঠাৎ এই ভল্ট নিয়ে কেন উঠে

পড়ে লেগেছে উনিই ভালো বলতে পারবেন। মি. মেরিওয়েদার খাটো গলায় বললেন, 'সোনার জন্যে।' “সোনা ?”

'হ্যাঁ, ফরাসি সোনা। ব্যাঙ্ক অফ ফ্রান্স থেকে আনিয়ে এই ভল্টে রাখা হয়েছে আর্থিক অবস্থা ভালো করার জন্যে। আনা হয়েছে মাসখানেক আগে, এখনও রয়ে গেছে এইসব বাক্সের মধ্যে। আমি যে-বাক্সে বসে, এর মধ্যেও সিসের পাত দিয়ে মুড়ে সোনা রাখা আছে। এত সোনা কোনো ব্যাঙ্কে থাকে না— নেইও।

হোমস বললে, "ব্যাঙ্কের আড়ালে লুকিয়ে থাকুন প্রত্যেকে— ওরা বেপরোয়া আমাদেরও তৈরি থাকতে হবে সেইভাবে। আপাতত আমি লণ্ঠনে ঢাকা দেব, ঘর অন্ধকার করব। কিন্তু আলো ফেলবার সঙ্গেসঙ্গে বেরিয়ে পড়বেন আড়াল থেকে। ওয়াটসন, যদি দেখ গুলি চালাচ্ছে, নির্দ্বিধায় তুমিও গুলি চালাবে।

রিভলভার বার করে কাঠের বাক্সের ওপর রেখে আড়ালে বসে পড়লাম আমি। হোমস ঘর অন্ধকার করে দিল লণ্ঠনে ঢাকা দিয়ে। সে কী অন্ধকার! পাতালঘর বলেই যেন আরও বেশি অন্ধকার। কোনো ভাষায় সে- অন্ধকারের বর্ণনা করা যায় না। তেলপোড়া গন্ধটা নাকে ভেসে আসায় বুঝলাম বাতি এখনও জ্বলছে, সময়মতো আলো দেখা যাবে।

ফিসফিস করে হোমস বললে, এদিকে তাড়া খেয়ে পালালে বেরোবার পথ কিন্তু একটাই— স্যাক্স কোবাগের সেই বাড়ি। মি. জোন্স, যা করতে বলেছি করেছেন তো?'

নিশ্চয়। একজন ইনস্পেকটর দুজন চৌকিদার নিয়ে পাহারা দিচ্ছে সেখানে।'

'চমৎকার। সব পথ বন্ধ। এবার শুধু প্রতীক্ষা। প্রতীক্ষা বলে প্রতীক্ষা! ওত পেতে ছিলাম মাত্র সওয়া একঘণ্টা। কিন্তু তখন মনে হয়েছিল যেন পুরো রাতটাই কাবার হয়ে গেল। ঘর নিস্তব্ধ। ফলে প্রত্যেকের বুকের খাঁচায় সচল হৃদযন্ত্রের আওয়াজ ঘরের মধ্যে যেন ধুপধাপ শব্দে শোনা যাচ্ছে। একে তো অন্ধকার, তার ওপর উৎকণ্ঠা— স্নায়ুর অবস্থা চরমে পৌঁছেছে। হঠাৎ একটা রোশনাই দেখা গেল মেঝেতে।

সামান্য একটা আলোর রেখা। অতি ক্ষীণ। পাথরের জোড় ভেদ করে আলোক রশ্মি অন্ধকারের বুকে প্রকট হয়ে উঠল। এতটুকু শব্দ শোনা গেল না— কিন্তু হলদেটে আলোর পরিধি বেড়েই চলল— দেখা গেল একটা গর্ত। মেয়েলি হাতের মতো একটা সাদা হাত বেরিয়ে এল সেই ফুটাে দিয়ে। মিনিট খানেক বাদে হাতটা অদৃশ্য হল পাতালে। তার কিছু পরেই সশব্দে উলটে পড়ল একটা বড়ো সাইজের পাথর। চৌকোনা গর্ত দিয়ে ঠিকরে এল লণ্ঠনের আলো। বাচ্চা ছেলের মুখের মতো একটা মুখ উঁকি দিল সেই গর্ত দিয়ে। এদিক-ওদিক জুলজুল করে তাকিয়ে হাচড়-পাচড়

করে উঠে এল মেঝেতে— টেনে তুলল আর একজন হালকা চেহারার পুরুষকে— এর চুল টকটকে লাল রঙের।

বাতাসের মতো সুরে বললে শেষোক্ত ব্যক্তি, "বেলচা আর থলি দাও।— আরে সর্বনাশ! পালাও, পালাও, আর্চি— লাফিয়ে পড়ো গর্তে। ধরল শার্লক হোমস। রিভলভারের নল ঝলসে উঠতেই সপাং শব্দে চাবুক হাঁকড়াতেই ঠিকরে গেল রিভলভার। পড়-পড় আওয়াজ হল। আর্চির জামা ছিড়ে যাওয়ায়— জোন্সের হাত ফসকে গর্তে লাফিয়ে পড়েছে সে। শান্ত গম্ভীর কণ্ঠে হোমস বললে, “জন ক্লে, তোমার খেল খতম

হয়েছে- এবার ক্ষ্যামা দাও।”

“কিন্তু আমার দোস্তকে তো ধরতে পারেননি, ততোধিক শান্ত কণ্ঠে বললে লাল-চুলো লোকটা। তার জামার খানিকটা কাপড়ই কেবল পেয়েছেন।

"তার জন্যে সুড়ঙ্গের ও-মুখে দাঁড়িয়ে আছে তিনজন— কিছু ভেবো

না।

বাঃ। চমৎকার নিখুঁত কাজ হয়েছে দেখছি। ‘তা হয়েছে, তোমারটাও কম নিখুঁত হয়নি। লাল-চুলোর আইডিয়া সত্যিই প্রশংসার করার মতো!'

জোন্স বললে, 'বন্ধুর জন্যে মন কেমন করছে তো? শিগগিরই দেখা হয়ে যাবে। এবার এসো দিকি বাছাধন, হাতকড়াটা লাগিয়ে দিই।”

'খবরদার!' খ্যাক করে ওঠে জন ক্লে। মনে রাখবেন আমার গায়ে রাজরক্ত আছে। নোংরা হাতে ছোবেন না আমাকে। ততক্ষণ কবজিতে লেগে গেছে হাতকড়া। তা সত্ত্বেও তড়পানি কমল না জন ক্লে-র “বাজে কথা একদম বলবেন না। 'হুজুর' বলে ডাকবেন। সবসময়ে 'দয়া করে” কথাটা বলবেন।”

‘তাই ডাকব হুজুর, মুচকি হেসে বললে জোন্স, 'এখন দয়া করে

উঠে আসুন, থানায় যেতে হবে যে *বাঃ, এই তো চাই, বসে বাতাসে মাথা ঠুকে আমাদের সবাইকে অভিবাদন জানিয়ে জোন্সের পেছন পেছন বেরিয়ে গেল জন ক্লে।

গদ গদ কণ্ঠে মেরিওয়েদার বললেন, 'মি. হোমস আপনি যে

আমাদের কী উপকার করলেন! ব্যাঙ্ক লুঠের এ-রকম আশ্চর্য চেষ্টা আজ

পর্যন্ত হয়নি। শুধু আপনার জন্যেই বানচাল হয়ে গেল ওদের ষড়যন্ত্র।'

হোমস বললে, "জন ক্লে-র সঙ্গে আমার একটু বোঝাপড়া বাকি ছিল— তাই তা চুকিয়ে নিলাম। এতে আমার কিছু খরচপত্র হয়েছে। ব্যাঙ্ক থেকে তা দিয়ে দিলে বাধিত হব। আমার সবচেয়ে বড়ো লাভ কিন্তু লাল- চুলো সংঘের এই অসাধারণ মামলার সুরাহা করা।

পরের দিন সকাল বেলা বেকার স্ট্রিটের ঘরে বসে মদ্যপান করতে করতে হেঁয়ালির ব্যাখ্যা করল শার্লক হোমস। বলল, 'লাল-চুলো সংঘের বিচিত্র বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে শব্দকোষ

নকলের অছিলায় রোজ চার ঘণ্টা একটা ঘরে বসিয়ে রাখার একটাই

উদ্দেশ্য— নিজের বাড়ি থেকে মাথামোটা বন্ধকি কারবারিকে সরিয়ে রাখা। চার পাউন্ডের লোভ বড়ো কম নয়। জাবেজ উইলসনের মাথার লাল চুল দেখেই আইডিয়াটা মাথায় আসে শয়তানদের। দুজনে মিলে বড়ো করে লাল-চুলো সংঘের নাম করে বেচারিকে সরিয়ে রাখল বাড়ির বাইরে।

“কিন্তু কেন? আর্থিক অবস্থা তার ভালো নয়, কারবারও ছোটো, কাজেই বাড়ির মধ্যে তেমন ধনদৌলত নেই। সোমত্ত মেয়েও নেই যে প্রেম করার জন্যে বাড়ির মালিককে বাড়ি থেকে সরাতে হবে। তাহলে নিশ্চয় আসল কাণ্ডটা ঘটছে অন্য কোথাও। ষড়যন্ত্র চলছে এই বাড়িতেই। তারপর যখন শুনলাম, মাটির তলার ঘরে ফটো ডেভলাপ করতে যায় কর্মচারী- তখনই রহস্য-তিমিরে আলো দেখতে পেলাম। চেহারার বর্ণনা শুনেই বুঝলাম লন্ডনের বড়ো অপরাধীদের মধ্যে সে-ও একজন। দু-মাস ধরে রোজ চার ঘণ্টা হিসেবে মাটির তলার ঘরে সে কী করেছে? নিশ্চয় সুড়ঙ্গ ছুঁড়েছে অন্য বাড়িতে যাওয়ার জন্যে।

অকুস্থলে পৌঁছে লাঠি ঠুকে দেখলাম সুড়ঙ্গটা বাড়ির সামনে না পেছনে। সামনে যে নয়, নিরেট আওয়াজ শুনেই বুঝলাম। কর্মচারী বেরিয়ে আসতেই দেখলাম হাঁটুতে মাটি লেগে কি না। সত্যিই লেগে আছে- ঘন্টার পর ঘণ্টা হাঁটু গেড়ে বসে মাটি খুঁড়লে প্যান্টের যা অবস্থা, অবিকল তাই। আমরা কেউ কাউকে চাক্ষুষ দেখিনি বলেই এই ঝুঁকিটা নিলাম।

'বাড়ির পেছনে গিয়ে দেখলাম রাস্তা পেরোলেই ব্যাঙ্ক। তখন আর কোনো সন্দেহই রইল না। তোমাকে বাড়ি পাঠিয়ে সোজা গেলাম স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড আর ব্যাঙ্ক ডিরেক্টরের কাছে।'

“কিন্তু জানলে কী করে যে সেইদিনই ওরা আসবে?' সংঘ তুলে দেওয়ার নোটিশ দেখে। অর্থাৎ জাবেজ উইলসনকে বাড়ি থেকে সরিয়ে রাখার দরকার নেই- সুড়ঙ্গ খোড়া হয়ে গেছে— এবার সোনা লুঠ করা দরকার। এবং সেটা যত তাড়াতাড়ি হয় ততই মঙ্গল। সেদিক দিয়ে শনিবার প্রশস্ত সময়— কেননা পালাবার জন্যে দুটো দিন হাতে পাওয়া যাবে। ওইসব ভেবেই শনিবারের ফাঁদ পাতলাম।”

'চমৎকার! এ যে দেখছি যুক্তির শেকল- ফাক নেই কোথাও!” বললাম সোচ্ছাসে।

হাই তুলে হোমস বললে, 'এসব মামলা হাতে নিলে একঘেয়েমি থেকে বাঁচা যায়। এইটাই আমার বড়ো লাভ।

'সেইসঙ্গে মানুষ জাতটারও কত মঙ্গল হল বল তো?

*তা হয়তো হল, তবে মানুষের চেয়েও বড়ো হল তার কীর্তি— যা থেকে যাবে।



ভালো লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন ...

ইনশাআল্লাহ এরকম আরো গল্প নিয়ে আসবো আপনাদের জন্য




×

Alert message goes here

Plp file


Category
Utube fair

pixelLab দিয়ে নিজের নাম ডিজাইন ও Mocup

Paid hack

App link topup